সৃষ্টির কল্যাণে ব্লাডব্যাংক
হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় সদকা আল্লাহর ক্রধকে প্রশমিত করে এবং অপমৃত্যুকে প্রতিহত করে, (তিরমিজি হাদিস - ৬৬৪)। আর অন্যকে রক্তদান একটি সর্বোত্তম সদকা।
রক্তদান সদস্য আহ্বান
রক্তদান পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও নিঃস্বার্থ উপহার। রক্ত ছাড়া কোনো মানুষের জীবন কল্পনাও করা যায় না। রক্তের প্রয়োজনে সময় মতো রক্ত সরবরাহ করা না হলে একজনের জীবন বিপন্ন হতে পারে। রক্তের ঘাটতি পূরণ করে রক্তদানের মাধ্যমে জীবন বাঁচানো যায়। চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্তদান করা কল্যাণমূলক কাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কাজ। মহান আল্লাহতায়ালার ঘোষণা : সৎ কাজের বিনিময় বা প্রতিদান উত্তম পুরস্কার ব্যতীত আর কী হতে পারে? (সুরা আর রহমান আয়াত-৬০)।
সৃষ্টির কল্যাণে ফাউন্ডেশন ব্লাড ব্যাংকে আপনি আপনার রক্ত দান ও প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত গ্রহন করতে পারবেন। আমরা এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সামাজিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে করে আসছি। ব্লাড ডোনার হতে ব্লাড গ্রহণের পূর্বে ডোনারকে সকল প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নেই ফলে আমাদের সম্মানিত ব্লাড ডোনারগন যেকোন ব্লাড ডোনার হতে নিরাপদ।
রক্তদানে উপকারিতা
১. রক্তদানে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে এবং রক্তের কোলেস্টারলের মাত্রাও কমে যায়। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি মারাত্মক রোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়। হার্ট ভাল থাকে এবং রক্তদাতা সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকেন।
২. রক্তদানের সময় রক্তে নানা জীবাণুর উপস্থিতি আছে কি-না তার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ফলে রক্তদাতা জানতে পারেন তিনি কোন সংক্রামক রোগে ভুগছেন কি-না।
৩. শরীরে রক্তকণিকা তৈরির কারখানা হলো অস্থিমজ্জা। নিয়মিত রক্তদান করলে অস্থিমজ্জা থেকে নতুন কণিকা তৈরি হয়, ফলে অস্থিমজ্জা সক্রিয় থাকে। এতে যে কোন দুর্ঘটনা বা অন্য কোন কারণে হঠাৎ রক্তক্ষরণ হলেও শরীর খুব সহজেই তা পূরণ করতে পারে।
৪. যাঁদের রক্তে আয়রন জমার প্রবণতা আছে, রক্তদান তাঁদের জন্য ভালো। আইরন কমাতে সহায়তা করে।
৫. অনেক সময় রক্তদাতার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৬. রক্ত দেয়ার সময় রক্তের গ্রুপিং করা হয়। ফলে রক্তদাতা তার রক্তের গ্রুপ জানতে পারেন।
৭. সাধারণত যে সংস্থার কাছে রক্ত দেয়া হয় তারা একটি ‘ডোনার কার্ড’ তৈরি করে দেয়। এই কার্ডের মাধ্যমে একবার রক্ত দিয়েই রক্তদাতা আজীবন নিজের প্রয়োজনে ওই সংস্থা থেকে রক্ত পেতে পারেন।
৮. রক্তদান একটি মহৎ কাজ, যা রক্তদাতাকে মানুষ হিসেবে বড় করে তোলে। রক্তদাতার সবচেয়ে বড় পাওয়া অসহায় বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচানো।
৯. মানবিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সকল দৃষ্টিকোণ থেকেও রক্তদাতা অনাবিল আনন্দ অনুভব করেন এবং সামাজিকভাবেও বিশেষ মর্যাদা পান। গ্রহীতা আর তার পরিবার চিরদিন ঋণী থাকেন তার জীবন বাঁচানোর জন্য। দাতার জন্য এটা যে কি আনন্দের তা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়।
১০. রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে পুণ্যের বা সওয়াবের কাজ। একজন মানুষের জীবন বাঁচানো অবশ্যই মহৎ কাজ।
একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে আমরা স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসবো ফলে পারস্পরিক সম্পর্কে আরও দৃঢ়তা বাড়বে। আর স্বেচ্ছায় রক্তদান এই সেবাপরায়ণতার অনুপম উদাহরণ। রক্তদান আমাদের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্বও বটে। এটা সম্পূর্ণ মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক কার্যক্রম। এর মাধ্যমে সামাজিক প্রীতিবন্ধন মজবুত করে, সামাজিক দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করে, এমনকি ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কারা রক্তদান করতে পারবেন
১৮ থেকে ৬০ বছরের যে কোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তি, যার শরীরের ওজন ৪৫ কেজির উপরে, তারা চার মাস পরপর নিয়মিত রক্তদান করতে পারেন। তবে রক্ত দিতে হলে কিছু রোগ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী, নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের জন্য রক্তদাতার শরীরে কমপক্ষে পাঁচটি রক্তবাহিত রোগের অনুপস্থিতি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। এ রোগগুলো হলো-হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, এইচআইভি বা এইডসের ভাইরাস, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস। রোগের স্ক্রিনিং করার পর এসব রোগ থেকে মুক্ত থাকলেই সেই রক্ত রোগীর শরীরে দেওয়া যাবে। অবশ্য একইসঙ্গে রোগীর ও রক্তদাতার রক্তের গ্রুপিং ও ক্রসম্যাচিং করাটাও জরুরি। এছাড়া রক্তদাতা শারীরিকভাবে রক্তদানে উপযুক্ত কিনা তা জানার জন্য তার শরীরের ওজন, তাপমাত্রা, নাড়ির গতি, রক্তচাপ, রক্তস্বল্পতার উপস্থিতি ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা হয়।
কারা রক্তদান করতে পারবেন না
১. রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে (পুরুষদের ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ডেসিলিটার এবং নারীদের ন্যূনতম ১১ গ্রাম/ডেসিলিটার)। ২. রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক না থাকলে। ৩. কিছু রোগ শনাক্ত হলে যেমন-হেপাটাইটিস-বি বা সি, জন্ডিস, এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি। ৪. শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ, যেমন-হাঁপানি, সিওপিডি, হৃদরোগ, অন্য কোনো জটিল রোগ। ৫. অন্তঃসত্ত্বা নারী, ঋতুস্রাব চলাকালীন, সন্তান জত্মদানের এক বছরের মধ্যে। ৬. যারা কোনো চিকিৎসা গ্রহণ বা কিছু ওষুধ সেবন করছেন, যেমন-কেমোথেরাপি, হরমোন, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি। ৭. ছয় মাসের মধ্যে বড় কোনো দুর্ঘটনা বা অপারেশন হলে।
মনে রাখতে হবে, আমার শরীরের রক্তে আরেকটি জীবন রক্ষা করছে। পৃথিবীর আলো, বাতাস উপভোগের অপার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তাই পরোপকারই হোক আমাদের জীবনের ব্রত। একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন।
রক্তের প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ
- +88-01610437066
- +88-01610437066
- sristirkollanefoundation@gmail.com
- blood@sristirkollanefoundation.com