যাকাত ফিতরা মান্নত

যাকাত ফিতরা মান্নত

যাকাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা, শুদ্ধি ও বৃদ্ধি। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে  সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ হতে শরিয়াহ নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ/অর্থ কুরআনে বর্ণিত আট প্রকারের কোন এক প্রকার লোক অথবা প্রত্যেককে দান করাকে যাকাত বলে। যাকাত ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি এবং যাকাত ছাড়া দ্বীন পরিপূর্ণতা লাভ করে না। যাকাতের ফরয অস্বীকার করলে ওই ব্যাক্তি কাফের হয়ে যায়। 

পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াত থেকে যাকাতের গুরুত্ব বোঝা যায়। সুরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে- ‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’

অন্য আয়াতে যাকাতের  গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দুআ করবেন। আপনার দুআ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা তাওবা : ১০৩)

ইসলামের আলোকে যাকাত ফিতরার গুরুত্ব আলোচনা করা হলোঃ

সম্পদ বৃদ্ধিঃ যাকাত দিলে সম্পদ যেমন পবিত্র হয়, ঠিক তেমনিভাবে আল্লাহ ওই সম্পদের জিম্মাদার হয়ে যান, ওই সম্পদের কেউ ক্ষতি বা বিনষ্ট করতে পারে না। যদি সঠিক নিয়মে যথাযথভাবে যাকাত প্রদান করা হয়, তবে সে সম্পদ চুরি হয় না, আগুনে পুড়ে না, পচে না, নষ্ট হয় না, কেউ আত্মসাৎ করতে পারে না। 

দারিদ্র বিমোচনঃ ইসলামি অর্থনীতিতে যাকাত ফেতরা ও দান খয়রাত দরিদ্রদের মৌলিক অধিকার। যাকাতের মাধ্যমে অভাবী, দুর্দশাগ্রস্ত, অসহায়, ক্ষুধার্ত, নিঃস্ব, দরিদ্র লোকজনের অভাব-অনটন দূর করা এবং অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করা সম্ভব। ইসলামে যাকাত ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্যই হলো মানবসেবা তথা হতদরিদ্র মুসলমানদের আর্থসামাজিক জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করা। পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জাকাত, সদকা, ফেতরা আর ধন সম্পদ এবং তা ব্যয়ের বিষয়ে আলোচনা এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক হকদারকে তার ন্যায্য অধিকার দিয়ে দাও।

 অর্থনৈতিক ভারসাম্যঃ যাকাতের মাধ্যমে সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। ধনীরা তাদের উদ্বৃত্ত সম্পদের সাধারণত ৪০ ভাগের এক ভাগ বছর শেষে যাকাত প্রদান করে মানব সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। ইসলামি বণ্টন ব্যবস্থায় ধনীরা তাদের ধন-সম্পদের কিছু অংশ দরিদ্রদের যাকাত দিলে গরিবদের সম্পদ কিছুটা বেড়ে যায় এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীভূত হয়। এভাবে ধনীর আয়-রোজগার থেকে নির্ধারিত কিছু অংশ কমিয়ে এবং সেই কমানো অংশ হতদরিদ্রদের আয়ের সঙ্গে যোগ করে ইসলামের বিধান অনুযায়ী যাকাত বণ্টনের ফলে সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা পায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাদের (সম্পদশালীদের) ওপর সদকা (জাকাত) অপরিহার্য করেছেন, যা তাদের ধনীদের কাছ থেকে আদায় করে দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।’

যাকাত আদায়ের মাধ্যমে যাকাত প্রদানকারী ব্যক্তির সম্পদ যেমন পবিত্র হয়, তেমন তার রিজিকে বরকত বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়ে পবিত্র আল-কুরআনের সূরা আত-তাওবা’য় বলা হয়, তাদের মালামাল থেকে যাকাত গ্রহণ কর, যাতে তুমি সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার এর মাধ্যমে। ধন সম্পদ আল্লাহর এক বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামতের শুকর করাও ঈমানদারদের একান্ত কর্তব্য। যাকাত আদায়ের মাধ্যমে নিয়ামতের শুকর আদায় হয়।দৈহিক ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নামাজ, ঠিক তেমনিভাবে আর্থিক ইবাদতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জাকাত। সীমাহীন গুরুত্বের কারণে এই দুইটি ইবাদতের কথা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে পাশাপাশি বর্ণনা করেছেন। ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে ৮২ স্থানে নামাজের সঙ্গে সঙ্গে যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, দৈহিক ইবাদত হিসেবে নামাজ যেমন খুবই জরুরি, তেমনি আর্থিক ইবাদত হিসেবে জাকাতও খুবই জরুরি। এছাড়া নামাজ এবং যাকাত একটি অপরটির সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ ও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা অনেকে হিসাব নিকাশ না করে কিছু অংশকে যাকাত মনে করে দান করি, আসলে এ ধরনের দান যাকাত হিসেবে পরিগণিত হয় না, সাধারণ দান হতে পারে। যাকাত প্রদানের সময় যথাযথভাবে নিসাব পরিমাণ হিসাব করে দান করতে হয় এবং তখনই যাকাতের হক আদায় হয়। সৃষ্টির কল্যাণে ফাউন্ডেশন যাকাতের মাধ্যমে দেশের গরীব, দুস্থ মানুষের জীবনে অবদান রেখে চলেছে। সমাজের দরিদ্র অভাবী মানুষের জীবনে পরিবর্তনে শরিক হতে আপনার যাকাতের একটি অংশ সৃষ্টির কল্যাণে ফাউন্ডেশন যাকাত তহবিলে প্রদান করে সমাজ পরিবর্তনে শরিক হতে পারেন।

অনুদান দিন

সৃষ্টির কল্যাণে ফাউন্ডেশন ব্যাংক অ্যাকাউন্টঃ

ব্যাংকঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক, শান্তিনগর শাখা, ঢাকা।

চলতি হিসাব নংঃ 1081050041667

বিকাশ/নগদঃ 01610437066

Donation Form

যোগাযোগের তথ্য

আপনার সাথে যোগাযোগ করতে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। 


Scroll to Top

অনুদান প্রদান ফর্ম

Donation Form

যোগাযোগের তথ্য

আপনার সাথে যোগাযোগ করতে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। 


×